অনুষদ:
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ
বিভাগ:
ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং
বিভাগ বৃত্তান্ত
বিভাগ প্রধান
প্রাক্তণ বিভাগ প্রধানগণ
শিক্ষক মন্ডলী
পাঠ্যসূচী
ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ
বিজ্ঞপ্তি সমূহ
ফলাফল সমূহ
গবেষণা পত্র
নিত্য কার্যশূচি
বাজেট বিন্যাস
সম্মান ফলক
যোগাযোগ
প্রোফাইল
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ
ইতিহাসের পথ বেয়ে
ইতিহাসের পথ বেয়ে
বিগত শতাব্দীর প্রথম ভাগ পর্যন্ত বৃহত্তর ফরিদপুরের এই অঞ্চলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের তেমন কোন সুযোগ ছিল না। এমতাবস্থায় ফরিদপুরের কৃতি সন্তান, নিখিল ভারত কংগ্রেসের সভাপতি, খ্যাতনামা আইনজীবি ও সমাজসেবক শ্রী অম্বিকাচরণ মজুমদার এই অঞ্চলে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। মূলত এই আলোকিত মানুষটির অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও সাহসী নেতৃত্বে ১৯১৮ সালে রাজেন্দ্র কলেজের যাত্রা শুরু। তবে কলেজ প্রতিষ্ঠার পথচলা উপরোক্ত বাক্যটির শাব্দিক বর্ণনার মত এতটা সহজতর ছিলনা। ১৯১৫ সালের ১৫ নভেম্বর অম্বিকাচরণ মজুমদারের নেতৃত্বে কলেজ প্রতিষ্ঠায় একটি কমিটি গঠিত হয়। অম্বিকাচরণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কমিটি প্রাথমিকভাবে কিছু অর্থ যোগাড়ে সমর্থ হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ঠ ছিল না। এমতাবস্থায় অম্বিকাচরণ মজুমদারের অনুরোধে তাঁর মক্কেল ফরিদপুরের বাইশরসির জমিদার রমেশ চন্দ্র রায় চৌধুরী তাঁর প্রয়াত পিতা রাজেন্দ্র চন্দ্র রায় চৌধুরীর নামে কলেজের নামকরণের শর্তে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেন। কলেজ প্রতিষ্ঠা কমিটি তার এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে কলেজের নাম রাজেন্দ্র কলেজ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এরপর কলেজের জন্য জমি প্রাপ্তি ও কলেজ অধিভুক্তির প্রক্রিয়া নিয়েই কেটে যায় বেশ অনেকটা সময়। অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পর অবশেষে ১৯১৮ সালের ১৩ মে তৎকালীন সরকার কলেজ অধিভুক্তির অনুমোদন দেয় এবং ফরিদপুর শহরের পূর্ব পাশে খেলার মাঠের (বর্তমান শহর ক্যাম্পাস) ৫.৫ একর জমি বার্ষিক এক টাকা খাজনার বিনিময়ে কলেজের নামে মঞ্জুর করেন। ১৯১৮ সালের ১ জুন জনাব কামাখ্যা নাথ মিত্র কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। ১৯১৮ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়, রোপিত হয় এক চারাগাছ আজ যা বিশাল মহীরুহে পরিনত হয়েছে। পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে কলেজের নতুন ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রয়োজনে বায়তুল আমান ক্যাম্পাসের কাজ শুরু হয়। এ বছরেই কলেজটিকে প্রাদেশিকীকরণ করা হয় এবং সরকারিভাবে অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর শিব প্রসন্ন লাহিড়ী। কলেজটিতে ১৯৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৬টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। বর্তমানে এখানে ১৯টি বিভাগে অনার্স ও ২০টি বিভাগে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। বর্তমানে এই কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার ও শিক্ষকের পদ ১৭০ টি। এভাবেই এগিয়ে চলেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠ।
ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষায়তনের অন্যতম সমৃদ্ধ একটি বিভাগ হল ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ। ২০১০-২০১১ শিক্ষাবর্ষে প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ মাহাবুবুর রহমান এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বি.বি.এ(অনার্স) কোর্স চালুর মাধ্যমে বিভাগটির পথচলা শুরু। প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধানের পদ অলংকৃত করেন জনাব ড. নিখিল রঞ্জন বিশ্বাস ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন , জনাব মোহাম্মাদ শামসুর রহমান , জনাব মোহাম্মদ মেহেদী হাসান । ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোশারফ আলী এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এম.বি.এ(মাস্টার্স) কোর্স চালু হয়। কলেজের বায়তুল আমানস্থ ক্যাম্পাসের বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের ২য় তলায় বিভাগের অবস্থান। এই বিভাগের শিক্ষা এবং অবকাঠামোগত সুবিধা যথেষ্ট সন্তোষজনক। বিভাগটিতে রয়েছে ৩টি শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন। বিভাগের সেমিনারে নতুন-পুরনো মিলিয়ে প্রায় ১০০০টি বই রয়েছে। রয়েছে একটি সুসজ্জিত সেমিনার কক্ষ যেখানে শিক্ষার্থীরা বইয়ের পাশাপাশি দৈনিক পত্রিকা-সাময়িকী পড়ার সুযোগ পায়। বিভাগে বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন শিক্ষক-কর্মকর্তা বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন । বর্তমানে এ বিভাগে প্রায় ১000 শিক্ষার্থী রয়েছে। এই বিভাগ থেকে পড়ালেখা শেষ করে অনেকেই এই বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। পরবর্তী সময়ে অনেকেই সরকারি-বেসরকারি দায়িত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বর্তমানেও করে চলছেন।
একজন আলোকিত মানুষ অম্বিকাচরণ মজুমদারের হাত ধরে রাজেন্দ্র কলেজ নামে যে জ্ঞানালোক শিখা প্রজ্জ্বলিত হয়েছিল বিশ শতকের গোড়ার দিকে, আজো তা জ্বাজল্যমান। এ শিখা আলো ছড়িয়ে যাবে কাল থেকে কালান্তরে, সেই সাথে সমৃদ্ধ হবে এ কলেজের ঐতিহ্যের অভিজ্ঞান-এটাই সকলের প্রত্যাশা।